বুয়েটে পড়ার পুরো সময়টাই হলে থেকেছি। আর যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রথম এক বছর ক্যাম্পাসের মধ্যে তিন জনে একটা তিন বেডরুমের বাসা শেয়ার করে থাকতাম। তাই অনেক রুমমেটের সাথে থাকারই অভিজ্ঞতা হয়েছে।
বুয়েটে আমার এক রুমমেট ছিলেন শিল্পপতি। ঠাট্টা না, উনার নিজের গার্মেন্টস ব্যবসা ছিলো, পরে এলপি গ্যাস প্লান্ট খুলছিলেন। পড়াশোনাতেও প্রচন্ড ভালো। মাঝে মধ্যে ব্যবসার কাজে বিদেশে যেতেন। আরেকজন ছিলেন চরম রমণীমোহন। উনার খোঁজে হলের গেস্ট রুমে অনেক মেয়ের আনাগোনা হতো।
একবার আমাদের রুমে বিশাল চুরি হলো। তবে মজার ব্যাপার হলো, ঐ সময় রুমে তিন জনই ছিলাম। আমাদের একটা কমন বৈশিষ্ট্য ছিলো, কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমানো। দরজা ভেজানো ছিলো, আর রুমে তি্নজন ঘুমাচ্ছি। পরীক্ষার মৌসুম, বই পত্র সব টেবিলে। সকালে উঠে দেখি আমার মানিব্যাগ, ক্যালকুলেটর, আর ইলেক্ট্রনিক্স বিষয়ের পাঠ্যবইটা নাই। দুই দিন পরেই পরীক্ষা!! আর আমার রুমমেটের? শিল্পপতি রুমমেটের চশমা নিয়ে গেছে চোর ফ্রেমের লোভে। বেচারাকে একদিন চশমা বিহীন কাটাতে হয়েছিলো। আর আমি বই বিহীন অবস্থায় পরীক্ষার আগের দিন খাবি খাচ্ছিলাম, তার পর নীলক্ষেতে গিয়ে দুই দিনের জন্য বইটা ভাড়া নিতে হলো।
একদিন পাশের রুমের ছেলেপেলে ডেকে নিয়ে গেলো, তাদের রুমমেটকে দেখানোর জন্য। পোলাপাইন ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে প্রস্তুত। রুমের বাইরেই শব্দ পেলাম, ট্যাংক চলার মতো করে শব্দ হচ্ছে। ঐ বেচারা এমনই নাক ডাকছে যে পুরা চার তলা বিল্ডিং কাঁপছে। মহা উৎসাহে বাকিরা তার ভিডিও করছে।
বুয়েটের রুমমেটদের সাথে আমার সময়টা খুব ভালই কেটেছে। বিদেশে এসে অবশ্য অন্য অভিজ্ঞতা। বাঙালি একজন আমার সাথে ক্যাম্পাসে থাকতো। খাইস্টামিতে নাম্বার ১। পরে বুঝতে পারলাম, বুয়েটে আমার রুমমেটদের সাথে টাকা পয়সার ভাগাভাগির ব্যাপার ছিলোনা। যখন সেটা যোগ হয়, তখন রুমমেটদের সম্পর্কও অন্যরকম হয়ে যায়।
Monday, February 19, 2007
রুমমেট সমাচার
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment