Monday, February 19, 2007

শ্রদ্ধাঞ্জলি: সিদ্দিকা কবীরের রান্না খাদ্য পুষ্টি

প্রবাসী বাংলাদেশীদের, বিশেষত ছেলেদের প্রবাস যাত্রার সময় কোন বইটা সুটকেসে থাকেই? অবশ্যইরান্না খাদ্য পুষ্টি“!!

সিদ্দিকা কবীরের এই বইটা মোটামুটি সব প্রবাসগামীকেই ধরিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশের পুরুষেরা সাধারণত রান্নাঘরের ১০০ হাত দূরে থাকে, তাই রান্নার -টা পর্যন্ত জানেনা। এরকম নাদান ব্যক্তিদের রক্ষাকর্ত্রী হিসাবে সিদ্দিকা কবীর তাঁর বইতে একেবারে গোড়া থেকে রান্নার কৌশল শিখিয়েছেন।

যত বইয়ের দোকানে খোঁজ করেছি, তারা সবাই বলেছে, এখনো তাদের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের মধ্যে এটা রয়েছে।

আমার এই লেখাটি সিদ্দিকা কবীরের রান্না খাদ্য পুষ্টি বইকে উৎসর্গ করছি, আমার স্ত্রী বিদেশে আসার আগে একাকী রান্নার অনেক হাত পুড়ানো, মশলা ছিটানো সন্ধ্যার ত্রাণকর্তা হিসাবে।

সিদ্দিকা কবীরের আত্মজীবনী পড়েছিলাম এক পত্রিকার ঈদ সংখ্যাতে। বাংলা উইকিপিডিয়ায় তাঁর জীবনী নিবন্ধটি নীচে তুলে দিলাম।

সিদ্দিকা কবীর - বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে

সিদ্দিকা কবীর (জন্ম মে , ১৯৩৫, ঢাকা) একজন বাংলাদেশী পুষ্টিবিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ। তিনি তাঁর লেখা রন্ধনবিষয়ক বইগুলির জন্য বিখ্যাত।

সূচিপত্র

* ব্যক্তিগত জীবন
* শিক্ষা
* চাকরী জীবন
* রান্নার অনুষ্ঠান
* তথ্যসূত্র

ব্যক্তিগত জীবন

সিদ্দিকা কবীরের জন্ম পুরানো ঢাকার মকিম বাজারে, ১৯৩৫ সালের ৭ই মে। তাঁর পিতা মৌলভি আহমেদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক পরবর্তীতে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। সিদ্দিকা কবীরের মাতা সৈয়দা হাসিনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী।

১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে সিদ্দিকা কবীর ব্যাংকার সৈয়দ আলী কবীরকে বিয়ে করেন।

শিক্ষা

সিদ্দিকা কবীর পড়াশোনা করেন প্রথমে ইডেন কলেজে। সেখান থেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হন সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৬৩ সালে খাদ্য পুষ্টি বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি পান।


চাকরী জীবন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসাবে খন্ডকালীন চাকরীতে যোগ দেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পরে প্রথমে ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে মাস কাজ করেন। এর পর তিনি ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। এখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহন করেন।

রান্নার অনুষ্ঠান

১৯৬৫ সালে সরকারী প্রতিষ্ঠান হতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রান্না শিখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানিন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনেঘরে বাইরেনামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন।

সিদ্দিকা কবীর তাঁররান্না খাদ্য পুষ্টিবইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। বইটি প্রথম প্রকাশের সময় মুক্তধারা, বাংলা একাডেমী সহ অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা এটি প্রকাশ করতে রাজী হয় নাই। পরে এটি নিজ খরচে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশের পর এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৮০ সালে লিখেন পাঠ্যবই খাদ্যপুষ্টি খাদ্য ব্যবস্থা, যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লিখেন, যা পরবর্তীতে খাবার দাবারের কড়চা নামে প্রকাশিত হয়।


তথ্যসূত্র

* আত্মজৈবনিক রচনা, প্রথম আলো ঈদ সংখ্যা, ২০০৬।

[লেখাটি সামহয়ারইনব্লগে ২০০৭/২/৪ তারিখে প্রকাশিত]

No comments: